সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০৮ অপরাহ্ন
শেফালি বেগমের সচ্ছলতার পেছনে অনেক ত্যাগ ও সংগ্রামের গল্প আছে। যশোর শহরের ধর্মতলা এলাকার ‘কাকির চায়ের দোকান’র মালিক শেফালি বেগম এ প্রসঙ্গে বলেন, জমিজমা না থাকায় যশোর শহরের ধর্মতলা রেললাইনের পাশে সরকারি জমির ওপরে একটি খুপরি ঘরেই দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করছি। ১৫ বছর আগে আমার স্বামী চা বিক্রেতা খাইরুল ইসলাম জটিল রোগে শয্যাশায়ী হন। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির এমন অসুস্থতায় ভেঙে পড়ি। এরই মধ্যে স্বামীর চিকিৎসার খরচ জোগাতে আত্মীয়স্বজন ও বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ধারদেনায় জড়িয়ে পড়ি। সংসারে উপার্জনক্ষম ব্যক্তি না থাকায় অনাহারে অর্ধাহারে কাটতে থাকে দিন। এঅবস্থায় চ্যাম্পিয়ন টি কোম্পানীর মালিক-চেয়ারম্যান এম আই ফারুক আহমেদ স্যার আমাকে অর্থ ও চ্যাম্পিয়ন চা পাতা দিয়ে সহযোগিতা করে। পরে বাধ্য হয়ে ধর্মতলা ফুটপাতে চা বিক্রি শুরু করি। ছেলেকেও সহযোগিতার জন্য কাজে লাগাই।
শেফালি বেগম বলেন, প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকে আমার দোকান। আমি নিজেই চা তৈরি করি। দুপুরের পর থেকে দোকানে ভিড় বাড়তে থাকে। বিকালের পর ভিড় জমে যায়। সব বয়সি মানুষের কাছে আমার চা প্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৬০ কেজি গরুর দুধে প্রায় সাড়ে ৩০০ কাপ স্পেশাল চা বিক্রি করি। যার দাম ৫-৬ হাজার টাকা। সঙ্গে লাল চাও বিক্রি করি। সব মিলিয়ে খরচ বাদে মাসে ২৫-৩০ হাজার টাকা আয় হয়। এতে চলে অসুস্থ স্বামীর চিকিৎসা ও সংসার খরচ। চা বিক্রির টাকায় দুই ছেলেমেয়েকে বড় করেছি। মেয়েটাকে বিয়ে দিয়েছি। শ্বশুরবাড়িতে সুখে আছে মেয়েটি। চায়ের ব্যবসায় আগের চেয়ে এখন লাভ বেশি। তাই এ ব্যবসায় চালিয়ে যাব যতদিন পারি।
শেফালি বেগমের অসুস্থ স্বামী খাইরুল ইসলাম জানান, আমার সংসারের হাল ধরতে গিয়ে শেফালি আগুনে পুড়ে কয়লা হয়েছে। তার কষ্ট, শ্রম, ঘামে আমার সংসার টিকে আছে। আমরা খেয়ে পরে বেঁচে আছি।